কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন কর্মচারীকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৭ আগস্ট) দুপুরে তিনি তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দিপক চন্দ্র মজুমদার ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জসিমকে ধমক ও দেখে নেয়ার হুমকি দেন বলে জানান তারা।
ভুক্তভোগী দিপক চন্দ্র মজুমদার ও মো. জসিম বলেন, ওনি আজকে আমাদের ফোন দিয়ে হুমকি দিয়েছেন। উনার আচরণে আমরা দুঃখ পেয়েছি। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
কেনো হুমকি দিয়েছে জানতে চাইলে তারা বলেন, উনি রেজিস্ট্রার থাকাকালীন সময়ে উনার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগে যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানে উনার পক্ষ নিয়ে কয়েকজন কর্মচারী মিথ্যা স্বাক্ষর দিয়েছে। যাদের নামে মিথ্যা স্বাক্ষর দিয়েছে, তারা আমাদের কর্মচারী সমিতির কাছে অভিযোগ করেছে যে তাদের না জানিয়ে স্বাক্ষর দেয়া হয়েছে। এখন এসব অভিযোগ কেনো আসতেছে এসব বিষয় নিয়ে আবু তাহের স্যার আমাদের সাথে এমন আচরণ করলেন।
জানা যায়, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের তাদের বলেন, চাকরিটা আমরা দিছি, এই জায়গার মধ্যে কারা সিগনেচার দিছে না দিছে এগুলোতে তোমরা কথা বলো। এই ক্যাম্পাসে আমি বেঁচে আছি। আমি তাহের ক্যাম্পাসে আছি, থাকবো। বেশি বাড়াবাড়ি করতেছো, এটার নাটের গুরু তুমি। আমি শুধু এটুকু বললাম। এগুলো আমার অনেকদিন ধরে কানে আসতেছে। আমি প্রফেসর ড. আবু তাহের এই ক্যাম্পাসে আমি আছি এটা বলে দিলাম। এটা মনে রাইখো।
এর আগেও অধ্যাপক তাহের তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিনকে হুমকি দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মহসিন বলেন, উনার মত একজন সিনিয়র শিক্ষকের কাছ থেকে আমরা এই ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করি না। উনি আমদের হুমকি দিচ্ছে আমাদের চাকরি খেয়ে ফেলবে, আমাদের চাকরি চলে যাবে এসব কথা বলে। এটা আমরা প্রত্যাশা করি না। যেহেতু আমাদের উনি এভাবে হুমকি দিয়েছেন আমি চাই প্রশাসন এর সুষ্ঠু তদন্ত করে এর বিচার করুক।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এই রেজিষ্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেইনি। তারা কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে গোলযোগ করছিলো, সমস্যা করছিলো। আমি শুধু বলেছি আমরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেক হোল্ডার, একটা পরিবার। নিজেদের মধ্যে এরকম সমস্যা করা যৌক্তিক না।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টা আমি মাত্র শুনলাম। সত্যিই যদি উনি কর্মচারীদের হুমকি প্রদান করে থাকেন, তবে আমি বলবো এ কাজটা শিক্ষকের মর্যাদার সাথে যায় না। বিষয়টা খুবই অপ্রত্যাশিত।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, কেউ কর্মচারী-কর্মকর্তা বা শিক্ষক কারো সাথে অশালীন আচরণ করবে এটা তো প্রত্যাশিত না। সবার সাথেই শালীনতার সাথে আচরণ করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আমার কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তাই বিষয়টি আমি জানিনা। তবে কেউ তো কাউকে ধমকানোর আইনত অধিকার নেই। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তো এরকম করা কোনোভাবেই উচিত না। এটা কাজের আদর্শের বহির্ভূত।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।